০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রশিবিরের সারাদেশের শাখা দায়িত্বশীলদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা সম্পন্ন

গতকাল  (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের সারাদেশের শাখা দায়িত্বশীলদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

এছাড়াও আয়োজনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল, মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, ড. মোবারক হোসেন, সালাহউদ্দীন আইউবী ও হাফেজ রাশেদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় সারাদেশের শাখা সভাপতি ও সেক্রেটারিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা মহান রবের কাছ থেকে এসেছি এবং তাঁর কাছেই ফিরে যাব। জান্নাতে যাওয়াই একজন মুসলমানের সফলতার মানদণ্ড। তাই পরকালের চিন্তা করে যে জীবন পরিচালনা করবে সেই সত্যিকারের সফল ব্যক্তি হবে। সর্বাবস্থায় সকল কিছুর জন্যই মহান আল্লাহর নির্ধারিত তাকদিরকে খুশি মনে মেনে নিতে হবে। দুঃখ, কষ্ট, প্রতিকূলতা সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধরতে হবে। ইসলামের পথে চলতে গিয়ে পাওয়া দুঃখ-কষ্টে গোনাহ মাফ হয়।

আমরা তাঁর আদর্শকেই ধারণ করেছি। যত ত্যাগ আর কষ্টই হোক সকল পরিস্থিতিতে দ্বীনের দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। আমাদের হারানোর কিছু নেই। আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কাউকে ভয় করা যাবে না। শাহাদাতের মৃত্যু আমাদের কাঙ্ক্ষিত। কেননা, শাহাদাতের মৃত্যু মানেই পরকালের সর্বোচ্চ সফলতা। মনে রাখতে হবে, চলমান জীবনব্যবস্থায় চলা নয়; বরং তা পাল্টে দিতে আমরা কাজ করছি। এ জন্য দরকার দুঃসাহসিক, নির্ভীক আল্লাহর সৈনিক। কেননা, ভীরু কাপুরুষদের জন্য ইসলামী আন্দোলন নয়। সুতরাং মজলুমের কোনো ভয় নেই; বরং জালিমরাই ভয়ে থাকে।”

দেশের চলমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী সরকার গণসমর্থনহীন, গণতন্ত্র হত্যাকারী, জনগণের অধিকার হরণকারী বাতিল সরকার। এ ব্যর্থ সরকারের কারণে দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিচ্ছেন। সরকার বারবার জনমতের তোয়াক্কা না করে নিজেদের ভয়াবহ পরিণতির পাল্লা ভারি করছে। কিন্তু ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। এ অবৈধ সরকারের পতন খুব শীঘ্রই হবে, ইনশাআল্লাহ।

আজ ছাত্রজনতা বুঝতে পেরেছে এবং প্রকাশ্যেই অভিমত দিচ্ছে যে, সৎ, যোগ্য ও আদর্শিক নেতৃত্বের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামী’ই গড়তে পারবে, ইনশাআল্লাহ। জাতির এ প্রত্যাশা পূরণে ব্যক্তি গঠন ও সাংগঠনিক অবস্থান মজবুতকরণে আগামী দিনগুলোতে আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, “যারা ছাত্রশিবিরের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়, তারা ইসলাম ও মানবতার শত্রু। তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই এই কাফেলাকে থামাতে পারেনি, কোনো দিন তা পারবে না, ইনশাআল্লাহ। ছাত্রশিবির মহান রব নির্দেশিত সেই আদর্শকে বহন করে, যেই আদর্শ পৃথিবীতে বহাল থাকবে শেষ দিন পর্যন্ত। রাসূল (সা.) এর পথ অনুসরণ করে ছাত্রশিবির একদিকে সীমাহীন ত্যাগের নজির স্থাপনের মাধ্যমে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে এ জমিনে নিজেদের ভিত্তি তৈরি করেছে। অন্যদিকে সৎ, যোগ্য ও আদর্শিক নাগরিক তৈরির অব্যাহত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশার প্রতিকে পরিণত হয়েছে।

ছাত্রসংগঠন হলেও ছাত্রশিবির দেশের সর্বস্তরের জনগণের হৃদয় জয় করেছে। এ জয় স্থায়ী। সময় এসেছে জাতির প্রত্যাশাকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সর্বাবস্থায় দাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে। বিশেষ করে হতাশ ও বিপর্যস্ত তরুণ-ছাত্রসমাজের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে তাদের জীবন কুরআনের আলোতে আলোকিত করতে হবে। সকল অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের জবাব দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনকে সর্বস্তরে বিস্তৃত করার মাধ্যমে দেওয়া হবে ইনশআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “কোনো ছাত্রসংগঠনের ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা, গুম ও সর্বগ্রাসী জুলুমের ইতিহাস বিরল। তবুও ছাত্রশিবির আল্লাহর সাহায্যে স্বমহিমায় টিকে আছে এবং সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে। এর মূল কারণ আমরা মহান আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখে পথ চলি। আমাদের জনশক্তিদের রক্ত পিচ্ছিল পথ আমাদের ভীত করে না; বরং ইমানিয়াতের সাথে শক্তি জোগায়। আমাদের ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা আমাদের চলার পথকে আরো মজবুত করে।

আমাদের শিক্ষা আন্দোলন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখায়। আমরা মনজিলে পৌঁছানো আগপর্যন্ত সামান্য সময়ের জন্য ক্ষান্ত হবো না। দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে সংগঠনের বিস্তৃতি ও মজবুতির পাশাপাশি দেশ, ইসলাম ও শিক্ষাবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম আরো তীব্র হবে, ইনশাআল্লাহ।”

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ
Get free post? Yes, Accept .

ছাত্রশিবিরের সারাদেশের শাখা দায়িত্বশীলদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা সম্পন্ন

আপডেট সময় : ০৩:৪২:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪

গতকাল  (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের সারাদেশের শাখা দায়িত্বশীলদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

এছাড়াও আয়োজনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল, মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, ড. মোবারক হোসেন, সালাহউদ্দীন আইউবী ও হাফেজ রাশেদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় সারাদেশের শাখা সভাপতি ও সেক্রেটারিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা মহান রবের কাছ থেকে এসেছি এবং তাঁর কাছেই ফিরে যাব। জান্নাতে যাওয়াই একজন মুসলমানের সফলতার মানদণ্ড। তাই পরকালের চিন্তা করে যে জীবন পরিচালনা করবে সেই সত্যিকারের সফল ব্যক্তি হবে। সর্বাবস্থায় সকল কিছুর জন্যই মহান আল্লাহর নির্ধারিত তাকদিরকে খুশি মনে মেনে নিতে হবে। দুঃখ, কষ্ট, প্রতিকূলতা সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধরতে হবে। ইসলামের পথে চলতে গিয়ে পাওয়া দুঃখ-কষ্টে গোনাহ মাফ হয়।

আমরা তাঁর আদর্শকেই ধারণ করেছি। যত ত্যাগ আর কষ্টই হোক সকল পরিস্থিতিতে দ্বীনের দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। আমাদের হারানোর কিছু নেই। আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কাউকে ভয় করা যাবে না। শাহাদাতের মৃত্যু আমাদের কাঙ্ক্ষিত। কেননা, শাহাদাতের মৃত্যু মানেই পরকালের সর্বোচ্চ সফলতা। মনে রাখতে হবে, চলমান জীবনব্যবস্থায় চলা নয়; বরং তা পাল্টে দিতে আমরা কাজ করছি। এ জন্য দরকার দুঃসাহসিক, নির্ভীক আল্লাহর সৈনিক। কেননা, ভীরু কাপুরুষদের জন্য ইসলামী আন্দোলন নয়। সুতরাং মজলুমের কোনো ভয় নেই; বরং জালিমরাই ভয়ে থাকে।”

দেশের চলমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী সরকার গণসমর্থনহীন, গণতন্ত্র হত্যাকারী, জনগণের অধিকার হরণকারী বাতিল সরকার। এ ব্যর্থ সরকারের কারণে দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিচ্ছেন। সরকার বারবার জনমতের তোয়াক্কা না করে নিজেদের ভয়াবহ পরিণতির পাল্লা ভারি করছে। কিন্তু ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। এ অবৈধ সরকারের পতন খুব শীঘ্রই হবে, ইনশাআল্লাহ।

আজ ছাত্রজনতা বুঝতে পেরেছে এবং প্রকাশ্যেই অভিমত দিচ্ছে যে, সৎ, যোগ্য ও আদর্শিক নেতৃত্বের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামী’ই গড়তে পারবে, ইনশাআল্লাহ। জাতির এ প্রত্যাশা পূরণে ব্যক্তি গঠন ও সাংগঠনিক অবস্থান মজবুতকরণে আগামী দিনগুলোতে আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, “যারা ছাত্রশিবিরের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়, তারা ইসলাম ও মানবতার শত্রু। তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই এই কাফেলাকে থামাতে পারেনি, কোনো দিন তা পারবে না, ইনশাআল্লাহ। ছাত্রশিবির মহান রব নির্দেশিত সেই আদর্শকে বহন করে, যেই আদর্শ পৃথিবীতে বহাল থাকবে শেষ দিন পর্যন্ত। রাসূল (সা.) এর পথ অনুসরণ করে ছাত্রশিবির একদিকে সীমাহীন ত্যাগের নজির স্থাপনের মাধ্যমে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে এ জমিনে নিজেদের ভিত্তি তৈরি করেছে। অন্যদিকে সৎ, যোগ্য ও আদর্শিক নাগরিক তৈরির অব্যাহত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশার প্রতিকে পরিণত হয়েছে।

ছাত্রসংগঠন হলেও ছাত্রশিবির দেশের সর্বস্তরের জনগণের হৃদয় জয় করেছে। এ জয় স্থায়ী। সময় এসেছে জাতির প্রত্যাশাকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সর্বাবস্থায় দাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে। বিশেষ করে হতাশ ও বিপর্যস্ত তরুণ-ছাত্রসমাজের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে তাদের জীবন কুরআনের আলোতে আলোকিত করতে হবে। সকল অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের জবাব দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনকে সর্বস্তরে বিস্তৃত করার মাধ্যমে দেওয়া হবে ইনশআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “কোনো ছাত্রসংগঠনের ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা, গুম ও সর্বগ্রাসী জুলুমের ইতিহাস বিরল। তবুও ছাত্রশিবির আল্লাহর সাহায্যে স্বমহিমায় টিকে আছে এবং সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে। এর মূল কারণ আমরা মহান আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখে পথ চলি। আমাদের জনশক্তিদের রক্ত পিচ্ছিল পথ আমাদের ভীত করে না; বরং ইমানিয়াতের সাথে শক্তি জোগায়। আমাদের ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা আমাদের চলার পথকে আরো মজবুত করে।

আমাদের শিক্ষা আন্দোলন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখায়। আমরা মনজিলে পৌঁছানো আগপর্যন্ত সামান্য সময়ের জন্য ক্ষান্ত হবো না। দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে সংগঠনের বিস্তৃতি ও মজবুতির পাশাপাশি দেশ, ইসলাম ও শিক্ষাবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম আরো তীব্র হবে, ইনশাআল্লাহ।”