ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপির দাবি নির্বাচনি রোডম্যাপ, জামায়াত চায় আগে সংস্কার

  • নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২৯:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে বিএনপি আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করলেও জামায়াত গুরুত্ব দিয়েছে সংস্কারে। একই দিনে অনুষ্ঠিত সংলাপে নানা সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

ধান উপদেষ্টার সাথে আলোচনা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “নির্বাচন আমাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি। তবে নির্বাচনের রোডম্যাপে আমরা সরকারের কাছে কোনও মাস দিনকাল নিয়ে কথা বলিনি।”

শনিবার বিকেলে বিএনপির পরপরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে বসে জামায়াতে ইসলামী।

সংলাপ শেষে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমাদের দেওয়া দু’টি রোডম্যাপের মধ্যে একটি হবে সংস্কারের, আরেকটি নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলেই নির্বাচন সফল হবে।”

ত ১১ই সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্র সংস্কারে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন।

মূলত এই সংস্কার কমিশনগুলোকে দলগুলো কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সেটি নিয়ে মতামত চাওয়া হয় এই সংলাপে।

একই সাথে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দলগুলোর কাছ থেকে মতামতও নেওয়া হয়।

প্রথম দিনের সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি ছাড়াও এদিন তিনটি আলাদা রাজনৈতিক জোটের সাথে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।

এই বৈঠকের মতামত নিয়েই সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করবে বলে আগেই জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে।

 

বিএনপি চায় নির্বাচনের রোডম্যাপ

প্রধান উপদেষ্টার সাথে এই বৈঠকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা এবং সে জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা-সহ আরও বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে বিএনপি।

এক ঘণ্টাব্যাপী এই সংলাপে বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির আরও পাঁচজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মি. আলমগীর বলেন, “নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এজন্য আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি।”

এই আলোচনায় নির্বাচন সংস্কার কমিটিতে কোনও বিতর্কিত ব্যক্তিকে না রাখা, জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল, দেশের সব ইউনিয়নের নির্বাচিত পরিষদ বিলুপ্ত করার দাবিও জানায় দলটি।

বিএনপি মহাসচিব জানান, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া দশম সংসদ থেকে শুরু করে সব জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করা সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

একই সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে রায় দেওয়ায় সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককেও বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানানো হয়েছে।

দেশের সাম্প্রতিক কিছু অসঙ্গতি নিয়েও এই সংলাপে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যারা দোসর হয়ে কাজ করেছে, লুটপাট, অত্যাচার ও গুম খুনের সাথে জড়িত ছিল তাদের অনেকেই এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।”

শেখ হাসিনা ভারতে থেকে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করতে আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি।

তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে সে বিষয়টি আরো গভীরভাবে দেখে কারা এ ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।”

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী ও আমলারা কীভাবে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে সেটি নিয়েও সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে বিএনপি।

এই আলোচনায় বিএনপি বিগত সময় গুম খুনের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া এবং সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেফতারকৃতদের জামিন দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Get free post? Yes, Accept .

বিএনপির দাবি নির্বাচনি রোডম্যাপ, জামায়াত চায় আগে সংস্কার

আপডেট সময় : ০৫:২৯:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে বিএনপি আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করলেও জামায়াত গুরুত্ব দিয়েছে সংস্কারে। একই দিনে অনুষ্ঠিত সংলাপে নানা সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

ধান উপদেষ্টার সাথে আলোচনা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “নির্বাচন আমাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি। তবে নির্বাচনের রোডম্যাপে আমরা সরকারের কাছে কোনও মাস দিনকাল নিয়ে কথা বলিনি।”

শনিবার বিকেলে বিএনপির পরপরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে বসে জামায়াতে ইসলামী।

সংলাপ শেষে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমাদের দেওয়া দু’টি রোডম্যাপের মধ্যে একটি হবে সংস্কারের, আরেকটি নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলেই নির্বাচন সফল হবে।”

ত ১১ই সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্র সংস্কারে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন।

মূলত এই সংস্কার কমিশনগুলোকে দলগুলো কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সেটি নিয়ে মতামত চাওয়া হয় এই সংলাপে।

একই সাথে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দলগুলোর কাছ থেকে মতামতও নেওয়া হয়।

প্রথম দিনের সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি ছাড়াও এদিন তিনটি আলাদা রাজনৈতিক জোটের সাথে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।

এই বৈঠকের মতামত নিয়েই সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করবে বলে আগেই জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে।

 

বিএনপি চায় নির্বাচনের রোডম্যাপ

প্রধান উপদেষ্টার সাথে এই বৈঠকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা এবং সে জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা-সহ আরও বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে বিএনপি।

এক ঘণ্টাব্যাপী এই সংলাপে বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির আরও পাঁচজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মি. আলমগীর বলেন, “নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এজন্য আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি।”

এই আলোচনায় নির্বাচন সংস্কার কমিটিতে কোনও বিতর্কিত ব্যক্তিকে না রাখা, জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল, দেশের সব ইউনিয়নের নির্বাচিত পরিষদ বিলুপ্ত করার দাবিও জানায় দলটি।

বিএনপি মহাসচিব জানান, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া দশম সংসদ থেকে শুরু করে সব জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করা সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

একই সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে রায় দেওয়ায় সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককেও বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানানো হয়েছে।

দেশের সাম্প্রতিক কিছু অসঙ্গতি নিয়েও এই সংলাপে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যারা দোসর হয়ে কাজ করেছে, লুটপাট, অত্যাচার ও গুম খুনের সাথে জড়িত ছিল তাদের অনেকেই এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।”

শেখ হাসিনা ভারতে থেকে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করতে আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি।

তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে সে বিষয়টি আরো গভীরভাবে দেখে কারা এ ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।”

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী ও আমলারা কীভাবে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে সেটি নিয়েও সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে বিএনপি।

এই আলোচনায় বিএনপি বিগত সময় গুম খুনের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া এবং সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেফতারকৃতদের জামিন দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।